Channel 786 | চ্যানেল ৭৮৬ | Community Bangla Newspaper

ইলহাম একাডেমি: আধুনিক জ্ঞানের সঙ্গে ইসলামি মূল্যবোধের সমন্বয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:৩২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইলহাম একাডেমি: আধুনিক জ্ঞানের সঙ্গে ইসলামি মূল্যবোধের সমন্বয়

সদা পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ, যোগ্য, সৎ ও সাহসী মানুষের প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন মেটানোর মহান ব্রত নিয়ে নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় আধুনিক জ্ঞানের সঙ্গে ইসলামি মূল্যবোধের অপূর্ব সমন্বয় করে শুরু হয়েছে একটি দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যার নাম ইলহাম একাডেমি।

একটি শিশুর সামগ্রিক বিকাশকে নিশ্চিত করতে বুদ্ধিবৃত্তিক ও আত্মিক শিক্ষার ব্যতিক্রমী সংমিশ্রন নিয়ে হাজির হয়েছে ইলহাম একাডেমি। শুধু একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব নয়, শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের ইহকাল এবং পরকাল উভয় ক্ষেত্রেই সাফল্যের সিঁড়ি মাড়াতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়ে পাঠ্যক্রম সাজিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
    
‘হোয়ার নলেজ মিটস ফেইথ’ এই স্লোগানে ২০২৪-এর শুরুর দিকে যাত্রা করেছে ইলহাম একাডেমি। নিউইয়র্ক রাজ্য প্রশাসনের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ইসলামিক স্কুলটির অবস্থান নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের কেন্দ্রস্থলে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হলো, ইসলামি মূলনীতিগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে একটি শিশুতে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা, যেন সে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

ইলহাম একাডেমি কেন সেরা?
দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। আবার দক্ষতা থাকলেও কোনো লাভ নেই, যদি ওই মানুষের চরিত্রে স্খলন থাকে। একটি শিশু যেন সমানতালে এই দুটোই অর্জন করতে পারে, সেই মিশন নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইলহাম একাডেমি। তাই আপনার সন্তানের শিক্ষাজীবনের শুরুতেই এই স্কুল হতে পারে তার জন্য অসাধারণ এবং আদর্শ এক প্রতিষ্ঠান।

ইসলামি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এই যুগে শিশুদের নৈতিক ভিত্তির ওপর গড়ে তোলাটা বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। ইলহাম একাডেমি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। স্কুলটির পাঠ্যক্রমে দৈনন্দিন শিক্ষার সাথে ইসলামি শিক্ষা এবং মূল্যবোধকে এমনভাবে একীভূত করা হয়েছে যে, শিক্ষার্থীরা চাইলেও সেটা এড়িয়ে যেতে পারবে না। ইলহাম একাডেমি চায়, ইসলামের সাথে গভীর সংযোগ গড়ে উঠুক প্রতিটি শিক্ষার্থীর। তাই ইসলামি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই সিলেবাস সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার শিক্ষাও দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের। 

সাধারণ শিক্ষার শ্রেষ্ঠত্ব
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কলা ও গণিত—ভালো ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো সবসময়ই মূখ্য ভূমিকা পালন করে। ইলহাম একাডেমি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে এই পাঁচ বিষয়ের ওপর। দ্রুত বিকশিত বিশ্বে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের জন্য প্রস্তুত করতে শিক্ষার্থীদের নার্সিং করা হচ্ছে। পাঠদানের ক্ষেত্রে ইলহাম একাডেমি হাতে-কলমে শিক্ষা এবং বিশ্বের আজকের বাস্তবতার ওপর জোর দেয়।

একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব
পরবর্তী প্রজন্মকে আদর্শিক ও সময়োপযোগী করে গড়ে তুলতে নিউইয়র্কে স্টেট যেসব স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ করেছে, সেগুলোর ওপর নজর রেখে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে ইলহাম একাডেমি। প্রতিটি শিক্ষার্থী যাতে মানসম্মত শিক্ষা পায়, সেজন্য উচ্চ শিক্ষিত এবং বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা ক্লাস পরিচালনা করে থাকেন। শিক্ষার্থীরা যাতে আনন্দ নিয়ে শিখতে পারে, সেজন্য ক্লাসগুলো তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করা হচ্ছে। 

ইউনিফর্ম
ইলহাম একাডেমির ইউনিফর্মের মধ্যে রয়েছে শালীনতার ছাপ। ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য সাদা পোলো শার্ট ও নেভি ব্লু পায়জামা বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পোশাক নির্ধারণ করা হয়েছে সাদা পোলো শার্ট, নেভি ব্লু পায়জামা, নেভি ব্লু জাম্পার এবং সাদা হিজাব।

অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ
ইসলামি শিক্ষার আলোকে পরিচালিত হলেও ইলহাম একাডেমির পরিবেশ সকল বর্ণ ও ধর্মের মানুষের জন্য সহায়ক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক। নিউইয়র্ক সিটি যে মাল্টিকালচারাল আবহকে ছড়িয়ে দিতে চায়, ইলহাম একাডেমিও সেটাকে ধারণ করে। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভিন্ন ভিন্ন উৎসব ও উদযাপনকে সমর্থন জানায় ইলহাম একাডেমি।

ভর্তির পদ্ধতি
আমরা চাই, যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে একজন অভিভাবক তার সন্তানকে ইলহাম একাডেমির কাছে সমর্পণ করুক। সেক্ষেত্রে শুরুতেই আমাদের অ্যাডমিশন অফিসের (৮৬৬) ৯৩৫৪২২৬ নম্বরে ফোন দিতে পারেন অথবা ইমেইল করতে পারেন [email protected] এই ঠিকানায়। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা আমাদের টিম ভর্তির যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করবে এবং ভর্তি সংক্রান্ত আপনার যে কোনো প্রশ্নের জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।

শুধু এখানেই শেষ নয়, সন্তানকে ভর্তির আগে যে কোনো অভিভাবক স্কুলটি ঘুরে দেখতে পারেন। যে প্রতিষ্ঠানে আপনার সন্তানকে পড়াতে চান, সেটা ভালোভাবে দেখাটা আপনার দায়িত্বও বটে। আপনি ক্লাসরুম ঘুরে দেখতে পারেন, শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন এবং কারিকুলাম সম্পর্কে জানতে পারেন। এছাড়া আমাদের ইনফরমেশন সেশন রয়েছে, যেখানে উপস্থিত থেকে বিশদভাবে জানা যাবে ইলহাম একাডেমিকে।

ভর্তির আবেদন করা যাবে অনলাইনেই। সেজন্য গ্রেডলিংকে অ্যাকাউন্ট খুলে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হবে। সেই সঙ্গে যথাযথ ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে। শিক্ষার্থীর জন্মসনদ, পূর্বের স্কুলের রিপোর্ট কার্ড, মেডিকেল রেকর্ডসহ স্কুলের চাহিদা অনুযায়ী সব কাগজপত্র সরবরাহ করতে হবে।

ইলহাম একাডেমিতে সন্তানকে ভর্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করার পর ওই অভিভাবকের একটি সাক্ষাৎকার নেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে সন্তানকে ঘিরে ওই অভিভাবকের চাওয়াটা নিশ্চিত হতে চায় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সন্তানের ব্যাপারেও জানতে চায়। জানতে চায় ওই পরিবারের মূল্যবোধ, যেন ওই শিক্ষার্থীকে সে অনুযায়ী গড়ে তোলা যায়।  

ভর্তির এই ধাপগুলোর অন্যতম একটি হলো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন। একটি বিশেষ দল আপনার সন্তানের সাক্ষাৎকার নেবেন। তার বর্তমান একাডেমিক পরিস্থিতি এবং ভর্তির জন্য কতটা প্রস্তুত, সেটা পরখ করবেন। যে গ্রেডে ভর্তি হতে চায়, সেই গ্রেডের মানদণ্ড অনুযায়ী কিছু প্রশ্ন করা হবে। এই সবকিছু মিলিয়ে সন্তুষ্ট হলে তবেই ভর্তির অনুমতি দেবে ইলহাম একাডেমি। নিয়মানুযায়ী, মেইলের মাধ্যমে ভর্তির অনুমতিপত্র পেয়ে যাবেন অভিভাবক। তার কাছে সরবরাহ করা হবে চুক্তিপত্র, ফ্যামিলি হ্যান্ডবুক, ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট ইনফরমেশনসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট। 

সিলেবাস
ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীরা যেন চলমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে, সেজন্য প্রত্যেক গ্রেডের সিলেবাসে বিজ্ঞানসহ ক্যারিয়ার উপযোগী সবগুলো বিষয়ের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়েও রয়েছে সমৃদ্ধ সিলেবাস। শিশুদেরকে খেলাচ্ছলে শেখানোর পাশাপাশি শেখানো হয় হাতে-কলমেও। বিশ্ব অন্বেষণ, আবহাওয়ার মৌলিক ধারণা, উদ্ভিদ, প্রাণীর জীবনচক্র, প্রযুক্তি, ভূগোল, সমাজ, রাষ্ট্র, ইকোসিস্টেম, জলচক্র, মানবদেহের গঠন, মার্কিন ইতিহাস, সরকার, সংস্কৃতি পড়ানো হয়। হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে রয়েছে বিজ্ঞান মেলা, ল্যাব পরীক্ষা এবং ইন্টারেক্টিভ সিমুলেশন।

ইসলামিক কারিকুলাম
বিস্তর গবেষণার পর সাজানো হয়েছে ইলহাম একাডেমির ইসলামিক কারিকুলাম। কোরআন শিক্ষার পাশাপাশি নববি আদর্শ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। ধারণা দেওয়া হয় ইসলামের সোনালী যুগ সম্পর্কেও। এছাড়া ধার্মিক মুসলমান হিসাবে জীবনযাপনের জন্য একটি নৈতিক কাঠামো প্রদান করা হয় শিক্ষার্থীদের। জ্ঞানের অন্যান্য শাখা যে ইসলামের বাইরে নয়, প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা সেটাও জানানো এবং বোঝানোর চেষ্টা করেন। এই পন্থা ছাত্রদের মধ্যে শক্তিশালী নীতিশাস্ত্র, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করে এবং ইসলামী নীতির মূলে থাকা সমস্যার সমাধান করে।

কোরানিক স্টাডিজ
প্রথমত ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীরা কোরআন পড়তে, বুঝতে ও মুখস্ত করতে শেখে। কোরআনের মর্মার্থ সূক্ষ্মভাবে বুঝার পাশাপাশি তেলাওয়াত করার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন তার নিজস্ব গতিতে কোরআন শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করে, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। কোরআন তেলাওয়াতের সঠিক নিয়ম ও শৈলী শেখানো হয়।

ইসলামিক স্টাডিজ
এই বিষয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আল্লাহর ওপর বিশ্বাস, প্রার্থনা, নৈতিকতা এবং আচার-ব্যবহারের আদর্শ পন্থার অনুসরণ করতে পারে। এর পাশাপাশি ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, সিরাত, ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গেও পরিচিত হয় শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষার লক্ষ্য হল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ইসলামের মূলনীতিগুলোর গভীর উপলব্ধি গড়ে তোলা।

আরবি
শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে আধুনিক ও স্ট্যান্ডার্ড আরবি শেখানো হয় ইলহাম একাডেমিতে। আরবি শব্দ ও বাক্য গঠন শেখানো হয়।

সামার ইভেন্ট
ক্লাসের পড়াশোনার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটির অংশ হিসেবে সম্প্রতি ইলহাম একাডেমির সামার ইভেন্ট সম্পন্ন হয়েছে বেশ জাকজমকপূর্ণভাবে। ইভেন্ট ঘিরে ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক মিথক্রিয়া, আনন্দ আর নানা প্রকার এক্টিভিটি। এই ইভেন্ট শিক্ষার্থীদের আরও সমৃদ্ধ করেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইলহাম একাডেমির সামার ইভেন্টে গুরুত্বপূর্ণ যা যা ছিল—

বারবিকিউ পার্টি
ইলহাম একাডেমির আনন্দপূর্ণ সামার ইভেন্টের অন্যতম অংশ ছিল বারবিকিউ পার্টি। শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবার নিয়ে এতে অংশ নেয়। মজাদার খাবারের পাশাপাশি এর মাধ্যমে পরিবারগুলোর মধ্যে একটা আন্তঃসম্পর্ক গড়ে ওঠে। বারবিকিউ পার্টিতে ছিল মজার মজার গেমস। খাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা আনন্দে মেতে ওঠেন।

স্ট্রিট ফেয়ার
সামার স্ট্রিট ফেয়ার ছিল দারুণ প্রাণবন্ত একটি আয়োজন। ছিল সুন্দর সাজসজ্জা সম্বলিত রঙিন স্টল আর শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স। এক কথায়, এটি সবার জন্য একটা মজার দিন ছিল। শিশুরা গেমস এবং কারুশিল্প উপভোগ করেছে।

ক্যাপ্টেন টিলি পার্ক ইভেন্ট
মজাচ্ছলে শিক্ষাগ্রহণের একটি ইভেন্ট ছিল নিউইয়র্কের ক্যাপ্টেন টিলি পার্কে। সেখানে খেলনা উপহার, শিক্ষামূলক গেম এবং কারুশিল্প অন্তর্ভুক্ত ছিল—যা বাচ্চাদেরকে তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে সাহায্য করছে। 

টমাস এডিসন পার্ক কার্যক্রম
থমাস এডিসন পার্কের অনুষ্ঠানটি ছিল বিশেষভাবে বিনোদনের জন্য ডিজাইন করা। অন্তর্ভুক্ত ছিল শিক্ষামূলক খেলাধুলা আর বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ।

কারুশিল্প প্রতিযোগিতা
কারুশিল্প প্রতিযোগিতা ছিল ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীদের জন্য শৈল্পিক প্রতিভার প্রদর্শনী। শিক্ষার্থীরা নিজেদের হাতে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে সেটা প্রদর্শন করেছে। এই প্রতিযোগিতা শুধু তাদের সৃজনশীলতাই তুলে ধরেনি বরং তাদের কৃতিত্ব ও প্রতিভাকে আরও উৎসাহিত করেছে।

পোষা প্রাণীদের প্রতি আচরণ
পোষা প্রাণীদের কীভাবে লালন-পালন করতে হবে, তাদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করতে হবে, ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীদের সেটা শেখানো হয়েছে এই ইভেন্টের মধ্যে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রাণীর সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পেয়েছিল এবং তাদের অভ্যাস ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পেরেছে। এই ইভেন্টটি তারা দারুণ উপভোগ করেছে।

বিজ্ঞান ট্রিপ
এটি ইলহাম একাডেমির একটি ভ্রমণ, যা শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষামূলক এবং ইন্টারেক্টিভ অভিজ্ঞতা প্রদান করেছে। তারা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সূত্রের ওপর প্রদর্শনী করেছে এবং হাতে-কলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বিশেষকরে তারা শেখার কার্যক্রমে এমনভাবে যুক্ত হয়েছে যা তাদেরকে চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে কৌতূহলী করে।

শিল্পী ইকবালের সঙ্গে নাশিদ ক্লাস
বিখ্যাত ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ইকবাল এইচজে ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীদের জন্য নাশিদ ক্লাসের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই ইভেন্ট শিশুদের ঐতিহ্যগত ইসলামিক গান শেখার এবং অনুশীলন করার সুযোগ করে দিয়েছে। নাশিদ সঙ্গীত সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উপলব্ধি আরও গভীর করেছে।

হিজরি নববর্ষ উদযাপন
নিউইয়র্কের বিভিন্ন মসজিদে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হিজরি নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে। ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীরা সেই উদযাপনে অংশ নেয়। তারা নববর্ষের বিশেষ নামাজ, দোয়া-মাহফিল আর শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশ নেয়। এতে হিজরি নতুন বছরের তাৎপর্য আরও ভাস্বর হয়ে ওঠে।

সামার ক্যাম্প প্রোগ্রাম
শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে দারুণ ভূমিকা রাখে এই প্রোগ্রাম। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত এবং বিনোদনমূলক উভয় অভিজ্ঞতা প্রদানের চেষ্টা করা হয়েছে। তারা ব্যক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সামষ্টিক কাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার দক্ষতাকে বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

নারীদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ
ইলহাম একাডেমির সামার ক্যাম্প প্রোগ্রামের একটি বিশেষ অংশ ছিল নারীদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ। এই কর্মশালার লক্ষ্য ছিল অংশগ্রহণকারীদের ব্যবহারিক আত্মরক্ষার দক্ষতা এবং নিরাপত্তা সচেতনতা দিয়ে ক্ষমতায়ন করা। অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের নেতৃত্বে, ক্লাসটি ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল এবং কৌশলগুলি শিখিয়েছিল, পাশাপাশি উপস্থিতদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং আত্মনির্ভরশীলতাকে উত্সাহিত করেছিল।

ফুড ড্রাইভ
সামার ক্যাম্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট ছিল ফুড ড্রাইভ। এটি শুধু খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলায় সহায়তা করেনি বরং দাতব্য ও সহানুভূতির মূল্যবোধকেও জাগ্রত করতে সহায়তা করেছে। অন্যের দুঃখে দুঃখিত হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে।

গত আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত সামার ক্যাম্পে অংশ নেওয়া ইলহাম একাডেমির শিক্ষার্থীরা হলেন—সাইম হোসেন আজিম, আয়েশা তাহানা জামান, তাহিয়া রহমান, সামিউল হোসেন, আফশীন সারা খান, রাইফা খান, সাইফ আহমেন সাদিক, মাইশা আহমেদ, আরিশা রহমান, আরহাম জাবির, সৈয়দ অরোক, আফহাম জাবির, মারিয়াম এলহিন্দি, অয়ন মাসুম, সরকার হাসিবুল, ইদ্রিস ভূঁইয়া, মুসা ভূঁইয়া, লিয়ানা মারিয়া, আন্নি হোসেন, সাইফান নেহান, মুহাম্মদ সুদাইস, সুহানি সানা ও সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

ইলহাম একাডেমিকে বিখ্যাতদের স্বীকৃতি
পথচলার শুরুতেই ব্যতিক্রমী ও সময়োপযোগী পাঠদানের জন্য শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে ইলহাম একাডেমি। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা ইলহাম একাডেমির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামি মূল্যবোধের প্রতি নিবেদনের জন্য মূল্যবান বার্তা দিয়ে স্কুলটির কর্তৃপক্ষকে উৎসাহ জুগিয়েছেন। 

মুশতাক আহমেদ
বিশ্বখ্যাত পাকিস্তানি ক্রিকেটার-কোচ
নিউইয়র্কবাসীর জন্য এটা খুবই ভালো খবর যে, ইলহাম একাডেমির মতো একটা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করেছে। তারা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি বাচ্চাদের এমনভাবে ইসলামিক শিক্ষা দেয়, যেটা অসাধারণ হয়ে ওঠে। আশাকরি, স্কুলটির কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের এমনভাবে গড়ে তুলবে, যাতে তারা সমস্ত খারাপ জিনিস থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। অভিভাবকদের উদ্দেশে মুশতাক আহমেদ বলেন, আপনার সন্তানকে ইলহাম একাডেমিতে পাঠান এবং স্কুলটিকে সহায়তা করুন। আমরা বিশ্বাস করি, সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় সাফল্যের শীর্ষ আরোহন করবে ইলহাম একাডেমি।

ড. সুজি ইসমাঈল
বক্তা, লেখক ও অধ্যাপক, রাটগার্স ইউনিভার্সিটি
এটি এমন একটি সময়, যখন মুসলিম আমেরিকান যুবকরা তাদের পরিচয়, বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। ইসলামিক পরিবেশ লালন পালন করার ব্যাপারে তাদের এই লড়াই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন লড়াইয়ের কালে জন্ম নিল ইলহাম একাডেমি। এই প্রতিষ্ঠান তরুণদের মধ্যে একাডেমিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও অসাম্প্রদায়িক চাহিদা পূরণের প্রতিশ্রুতি দেয়, যাতে তারা আগামী প্রজন্মের মধ্যে একটি শক্তিশালী ইসলামিক পরিচয় গড়ে তুলতে পারে। সবমিলিয়ে নিউইয়র্ক সিটি ইসলামিক স্কুল নেটওয়ার্কে দারুণ সংযোজন ইলহাম একাডেমি।

জামিলাহ জোনস
শিক্ষাবিদ ও গবেষক
ইসলামী শিক্ষা হল সেই ভিত্তি, যার ওপর আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত গড়ে ওঠে। এটি কেবল জ্ঞানই দেয় না বরং বিশ্বাস, সততা এবং সহানুভূতির মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলে। এটি আমাদের তরুণদের ইসলামি মূলনীতিতে আবদ্ধ থাকার পাশাপাশি একাডেমিকভাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে সক্ষম করে গড়ে তোলে। নিউইয়র্কে সম্প্রতি যাত্রা শুরু করা ইলহাম একাডেমি সেই শিক্ষাই দিয়ে যাচ্ছে তরুণদের। ইলহাম একাডেমির পাঠ্যক্রম শুধু কঠোর একাডেমিক মান পূরণের জন্যই নয় বরং ইসলামি মূল্যবোধগুলোকে সামনে রেখে সাজানো হয়েছে। সবমিলিয়ে স্কুলটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দিচ্ছে।

শেইখ ওয়ালিদ অ্যালবাটরাইউশ
পরিচালক, হিফজ একাডেমি
জীবনের শুরুতেই কোরআনের সঙ্গে পরিচয় হওয়া দরকার আমাদের সন্তানদের। আমরা জানি, আইটিভি ইউএসএ-এর মাধ্যমে আমেরিকার মাটিতে কোরআনের খেদমত হচ্ছে। এবার তাদেরই উদ্যোগে কুইন্সে ইলহাম একাডেমি নামে একটি ইসলামিক স্কুল যাত্রা করল। এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর। আমি চাই, স্কুলটি সফল হোক। আল্লাহর কাছে আমি সেই দোয়াই করেছি। আমাদের প্রত্যেকের উচিত বাচ্চাদের মানসিক গঠনে যত্ন নেওয়া। বিশেষকরে এই সমাজে আমরা যখন নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছি, তখন বাচ্চাদেরও সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তৈরি করতে হবে। এজন্য দরকার আধুনিক মানের ইসলামিক স্কুল। ইলহাম একাডেমি সেই অভাব অনেকটাই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।

শেইখ রামাদান এলশাবাগ
বিশ্বখ্যাত কারি
আমি ২৬ বছর ধরে নিউইয়র্কে কোরআন শিক্ষা দিচ্ছি। তাই কোনো কোরআনিক শিক্ষা বা ইসলামিক স্কুল চালু হলে আমি আনন্দিত হয়। তাই দারুণ খুশি হয়েছি ইলহাম একাডেমি দেখে। স্কুলটি আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি কোরআন শিক্ষার ওপর ফোকাস করেছে। আমাদের উচিত এই প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন জানানো এবং এর পাশে থাকা। নিউইয়র্কের মতো বৈচিত্র্যময় শহরে আমাদের শিশু কিশোর ও তরুণদের গাইড করার জন্য এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান খুবই দরকার ছিল। ইলহাম একাডেমি ঠিকঠাকভাবে কার্যক্রম চালাতে পারলে আমরা আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে অনেকটাই নিশ্চিত হতে পারবো। আশাকরি, আমাদের শিশুরা বড় হবে ইসলামি মূলনীতির আলোকে তৈরি নৈতিকতার মাধ্যমে।

ইন্সপেক্টর আদিল রানা
প্রেসিডেন্ট, এনওয়াইপিডি মুসলিম অফিসার্স সোসাইটি
নিউইয়র্ক সিটিতে একটি নতুন ইসলামিক স্কুল খোলার জন্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন! ইসলামি মূল্যবোধ ও নীতির আলোকে পরিচালিত ইলহাম একাডেমি মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে প্রত্যাশা করি৷ একজন মানুষের জীবনে ইসলামী শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশে সহায়তা করে। ছোটবেলা থেকেই নৈতিকতার মানদণ্ডে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য এই শিক্ষা আরও বেশি প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা সততা, সহানুভূতি এবং সেবার মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠে। আশাকরি, ইলহাম একাডেমি সেই প্রয়োজনীয় শিক্ষাটাই প্রদান করবে এবং স্থিতিশীল ও সুন্দর সমাজ গঠনে অর্থপূর্ণ অবদান রাখবে। জ্ঞানের আলোকবর্তিকা হয়ে উঠুক ইলহাম একাডেমি, সেই প্রত্যাশা করছি।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ