নিউইয়র্ক ডায়েরি
নিউইয়র্কের কমিউনিটি নিউজ নেটওয়ার্ক চ্যানেল-৭৮৬'র প্রতিদিনের আয়োজন 'নিউইয়র্ক ডায়েরি'-তে শুক্রবারের বিশেষ আলোচনায় যুক্ত ছিলেন কবি এবং শিক্ষক আশরাফ হাসান। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। সঞ্চালনায় ছিলেন আরজে মোহনা।
প্রকৃতিতে এখন বর্ষা। বর্ষা নিয়ে আপনার কোন লেখা মনে পড়ছে?
'মন খারাপের মেঘলা দিনে' কবিতা বেশি মনে পড়ছে।
বর্তমানে কি নিয়ে লেখালেখি করছেন?
বর্তমানে যেই লেখাটা লিখতে চাচ্ছি তা অনেক বেশি জীবনের সাথে সম্পর্কিত। আমরা জীবনে যা চাই তা পাই না, আর যা পাই তা চাই না। এই বিষয়েই লেখাটা লিখছি। খুব যত্ন করে লেখার চেষ্টা করেছি। আশা করছি খুব ভালো হবে।
গতকাল 'বিশ্ব খরা ও মরুকরণ বিরোধী দিবস' ছিলো। প্রকৃতি নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই?
অবশ্যই মরুকরণ বা খরা প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। খরা বাড়লে প্রকৃতি আর সুজলা-সুফলা থাকবে না। প্রকৃতিতে জীবের বসবাস নিয়ে শংকা দেখা দেয়। ৮০'র দশকে একবার বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ নিয়ে অনেক আলোড়ন তৈরি হয়েছিলো। আমার মনে হয় সেই চেষ্টা পুনরায় গোটা বিশ্বব্যাপি করা উচিৎ।
২০ জুন কবি সুফিয়া কামালের ১১০ তম জন্মদিন। দিনটি ঘিরে কোন পরিকল্পনা কি আছে?
অবশ্যই তিনি একজন প্রথম সারির বরেণ্য কবি। তার লেখার ছন্দ এবং সহজ সরল ভাষা তাকে মানুষের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। তার লেখার সরলতা কিছুটা কবি জসিমউদদীন এর মতো। কবি সুফিয়া কামালের লেখা কবিতা শহর-গ্রাম সব জায়গাতেই পাঠক নন্দিত। আমাদের ছোট বেলায় আমরা ওনার 'পল্লীর স্মৃতি' কবিতাটি পড়েছিলাম যা সবার মুখে মুখে ছিলো। কি সুন্দর করে তিনি গ্রামের প্রতিটি ভালোবাসার বিষয় তুলে ধরেছিলেন। এমন কবিকে সবাই আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবো এবং তার লেখাগুলোকে সংরক্ষণ করবো।
২২ জুনের ভোটে বেশ কয়েকজন বাঙালি প্রার্থী আছেন। আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই ?
এটা অবশ্যই গর্বের বিষয়। তারা জয়ী হবে কিনা সেটা আমি জানি না কারণ আমরা সংখ্যায় কম। কিন্তু তারা যে সাহস করে বেরিয়ে এসেছেন, দাঁড়িয়েছেন, এটা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ জানানোর মতোই।
বাংলাদেশিদের জয়-পরাজয় নিয়ে নানা মতভেদ দেখা যায়, কেন?
হ্যাঁ, অনৈক্য ব্যাপারটা অনেকাংশেই মুখ্য কারণ। কেননা, আমরা ভোটারই অল্প। তারওপর যদি সেই ভোটগুলো ভাগ হয়ে যায়। প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিচারের চেয়ে স্বজনপ্রীতি অনেক বেশি কাজ করে। তাই সবাই মিলে একজনকে প্রার্থী মনোনীত করলে জয়ের সম্ভাবনা কিছুটা এগিয়ে যায়।
কবিতা লিখে সম্মাননা পেলে কেমন লাগে?
অবশ্যই অনেক বেশি ভালো লাগে। যেই ভালোলাগাটা বলে বোঝানোর মতো না। তবে এই স্বীকৃতি আমার দায়িত্ব আরও অনেক বাড়িয়ে দেয়। যেন আরও বেশি ভালো ভালো লেখা পাঠকদেরকে উপহার দিতে পারি।
নতুন প্রজন্মের কবিদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন ?
নতুন যারা ফেইসবুক বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি করছে তাদের এই চেষ্টাকে আমি সমর্থন করি। আমি চাইবো তারা লেখালেখিকে সিরিয়াসলি নিক। তবে একটা বিষয় আছে। না পরে হুটহাট লেখা যাবে না। একটা কবিতা লিখতে হলে তার আগে অবশ্যই ১০০টা কবিতা পড়ে নিতে হবে। তাহলে ধারণা, ভাষাগত দিক গুলো আরও পরিষ্কার এবং পরিণত হবে।
আপনার পাঠক এবং বাঙালি দর্শকদের উদ্দেশ্যে কি বলার আছে?
বাঙালি পাঠক এবং দর্শকদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা বলবো, বেশি বেশি বাংলা বই পড়ুন। বেশি বেশি বাংলা চর্চা করুন।নিজের ভাষাকে ভালোবাসুন।