নিউইয়র্ক সিটির অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩২ থেকে প্রতিদ্বিন্দ্বায় নেমেছেন ইয়র্ক কলেজের সাবেক শিক্ষক, সুপরিচিত কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ড. অ্যান্থনি ডি অ্যান্ড্রুজ জুনিয়র। নির্বাচনী পরিকল্পনা, প্রার্থীতার কারণ, জয়ের সম্ভাবনা, বাঙালি কমিউনিটির সঙ্গে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন কমিউনিটি নিউজ নেটওয়ার্ক চ্যানেল ৭৮৬-এর সঙ্গে। সঙ্গে ছিলেন রোকেয়া মোহনা।
কী কারণে আপনি নিজেকে স্টেট এসেম্বলি পদে যোগ্য মনে করছেন?
একজন ভোটার প্রার্থীর মধ্যে যে কোয়ালিটিগুলো দেখাতে চান, আমি মনে করি আমার মধ্যে তার সবগুলোই আছে। আমি আমার কমিউনিটিতে অপরিচিত কেউ নই। হঠাৎ করেই প্রার্থীতা ঘোষণা করিনি। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এক্টিভিজম করেছি, সাধ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। ডিস্ট্রিক্ট লিডারের দায়িত্ব পালনের সময় নাগরিকের কাছে রাষ্ট্রের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি, স্টেট এসেম্বলি পদে তারা আমাকে গ্রহণ করবেন।
৩২ এসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট কোন তিনটি বড় সংকট মোকাবেলা করছে?
সংকট তো অনেক আছে। সেখানে থেকে বার্নিং বাছাই করতে হলে আমি আমার নির্বাচনী এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা বলবো। এমনিতেই তারা এক ধরনের সংকটের ভেতর দিয়ে যায়, প্যান্ডামিকের কারণে সেই সংকট আরও বেড়েছে। সিটির বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের কারণে তারা অনেকে বাধ্য হয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। আমি নির্বাচিত হতে পারলে তাদের এই সংকটের সমাধানে জোর প্রচেষ্টা চালাবো। এছাড়া হোমলেস ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে, এ নিয়েও কাজ করবো। কমিউনিটিতে হেইট ক্রাইম বাড়ছে, এটা বন্ধ করতে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আত্মনিয়োগ করবো।
বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে আপনি কী কী কাজ করেছেন?
আমার জীবনের একটা বড় সময় কেটেছে ইয়র্ক কলেজে। সেখানে পড়াতে গিয়ে অনেক বাঙালি শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। স্বাভাবিকভাবেই বাঙালি এবং তাদের সংস্কৃতি নিয়ে আমার মধ্যে একটা আগ্রহ জন্ম নেয়। সেই থেকে শুরু, তারপর তারপর তারা আমাকে গ্রহণ করে, আমিও তাদের গ্রহণ করি। প্রতিবছর আমি বেশ আড়ম্বরভাবে বাংলাদেশ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যোগ দেই। বাঙালি কমিউনিটিতে আমার অনেক বন্ধু আছে। তারা তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে আমাকে আহŸান করে, আমিও বেশ আনন্দ নিয়ে সেগুলোতে যোগদান করি। আমি যখনই যেখানে দায়িত্ব পালন করেছি, সেখানেই আমার কনসার্নের একটা অন্যতম অংশজুড়ে ছিল বাংলাদেশি কমিউনিটি।
দুই দশক ধরে আপনি ইয়র্ক কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
এই সময়টা এখন পর্যন্ত আমার জীবনের সেরা সময়। ইয়র্ক কলেজে আমি কিন্তু শুধু শিক্ষকতাই করিরি, বিভিন্ন টিম কিংবা প্রোগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছি। এতে করে ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বাইরেও পুরো কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার একটা উষ্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তারা তাদের সবাইতে ভীষণ ভালোবাসি। আমার ধারণা তারাও আমাকে পছন্দ করেন। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে আমার অনেক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
আপনি ১০ বছর ডিস্ট্রিক্ট লিডার ছিলেন। সেখানে কী কী করেছেন?
একজন ডিস্ট্রিক্ট লিডারের কাজ হলো প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সমন্বয় সাধন করা। এ ব্যাপারে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। রাষ্ট্রের কাছে একজন নাগরিক কী কী সুবিধা পেতে পারেন, কীভাবে প্রশাসনের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় সেই সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন- তা নিয়ে মানুষকে সচেতন করেছি।
কুইন্স হসপিটাল সেন্টারের উপদেষ্টা হিসেবে কী কী কাজ করেছেন?
কুইন্স হসপিটাল সেন্টারে কাজ করতে গিয়ে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। কমিউনিটির মানুষ যেন যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা পায়, সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। স্বাস্থ্যসেবাকে কীভাবে আরও সহজ করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করেছি। স্টেট এসেম্বলিতে জয়ী হতে পারলে সেসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবো।
কেন বাঙালি কমিউনিটি আপনাকে ভোট দেবে?
তারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, এটা আমার আত্মবিশ্বাস। এই আত্মবিশ্বাস পেছনে আছে দীর্ঘদিনের পথচলা। বাঙালি কমিউনিটির সঙ্গে আমার সখ্যতা অনেক দিনের। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন এক্টিভিজম করেছি। বাঙালি কালচারের সঙ্গেও আমার পরিচয় আছে। আমি যেমন তাদেরকে চিনি, তারাও আমাকে চেনে। বাঙালি কমিউনিটি কী চায় কিংবা তাদের সংকট কোথায়, সেটা আমার চেয়ে ভালো কেউ চিহ্নিত করতে পারবে না। তাই আমি মনে করি, বাঙালি-আমেরিকানরা আমাকেই সমর্থন দেবেন।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected]। আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।