শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্বের কারণে টানা চারবার সিনেটরের সম্মাননা পেয়েছে কালেকটিভ টিউটোরিয়াল। প্রতিষ্ঠানটির এমন সাফল্যের রহস্য কী, তা জানতে চ্যানেল ৭৮৬ মুখোমুখি হয়েছে এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ও সিইও শিরিন আখতারের। তিনি জানিয়েছেন, সম্মানরা পাওয়ার অনুভূতি, প্রতিষ্ঠানটির বৈশিষ্ট্য, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ আরও অনেক কিছু…।
টানা রেকর্ড সম্মাননা পাওয়ার অনুভূতি কেমন?
ডেফিনেটলি ভালো লাগার অনুভূতি। ইতিহাস তৈরি করেছে কালেকটিভ টিউটোরিয়াল-এই বিষয়টা আমার জন্য কতটা গর্বের, সেটা বলে বুঝাতে পারবো না। আল্লাহর কাছে এজন্য শুকরিয়া জ্ঞাপন করি। আমরা তো মানুষ তৈরির কাজ করি, সেটাও একটা ভালো লাগার ব্যাপার। তারওপর স্বীকৃতি যোগ হলে তো কথাই নেই।
এই অর্জনে কাদের অবদান সবচেয়ে বেশি?
এটা আমাদের টিমওয়ার্ক। তবে বিশেষভাবে আমাদের শিক্ষকদের কথা উল্লেখ করবো। তাদের মেধা আর শ্রম আমাদেরকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। আমরা ভালো শিক্ষক হায়ার করি এবং হায়ার করার পর সাধারণত কখনো ফায়ার করি না। আমাদের আছে দক্ষ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সবার সম্মিলত প্রচেষ্টাই আমাদেরকে এতদূর এগিয়ে নিয়ে এসেছে।
আপনাদের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটা কেমন?
ভালো ছাত্র হলেই যে কেউ দক্ষ শিক্ষক হবে, এমনটা নয়। অনেকেই ভালো রেজাল্ট করে, কিন্তু ভালো শিক্ষক হতে পারে না। আমি শিক্ষক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথমত রেজাল্ট দেখি। যে সাবজেক্টের জন্য হায়ার করছি, ওই সাবজেক্টে নম্বর কেমন, সেটা দেখি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে দুজন শিক্ষক আছেন, যারা নিউইয়র্ক স্টেটে দুবার সবচেয়ে হায়েস্ট স্কোর করেছিলেন। সবকিছু ঠিক হওয়ার পর বাছাইকৃতদের দুটি-তিনটি ক্লাস করাতে দেওয়া হয়। তারা কীভাবে পড়ায় সেটা পর্যবেক্ষণ করি, একইসাথে স্টুডেন্টদের কাছ থেকেও রিকমান্ডেশন নেওয়ার চেষ্টা করি। এরপর বিষয়টা ফাইনাল করি।
মূলত শিক্ষার্থীদের কারণেই তো আজ আপনার প্রতিষ্ঠান এত ওপরে…
অবশ্যই, সেটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। জেনিফার রাজকুমার কিছুদিন আগে আমাদের কালেকটিভ টিউটোরিয়াল-এর সঙ্গে একটি প্রোগ্রাম করেছিলেন। সেখানে আমার অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এদের কয়েকজন রেকর্ড নাম্বার নিয়ে ভর্তি হয়েছে নিউইয়র্কের ভালো ভালো স্কুলে। আমি সেই শিক্ষার্থীদের বলি, এই সাকসেস একান্তই তোমাদের। এই শিক্ষার্থীরা আমার শক্তি আবার আমিও ওদের শক্তি। আমরা যৌথভাবে কাজ করি।
কালেকটিভ টিউটোরিয়ালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য কোনগুলো?
আমরা তিনটা কোয়ালিটির ব্যাপারে কখনো আপস করিনি। দক্ষ শিক্ষক, ইন্ডিভিজুয়াল লেসন অর্থাৎ প্রত্যেকের দুর্বলতা চিহ্নিত করে সেখানে জোর দেওয়া এবং যৌক্তিক ফি। বলবো না যে আমরা সবচেয়ে কম ফি নেই, তবে এটা বলতে পারি, আমরা শিক্ষার্থীর সংকটকে বিবেচনায় রাখি। আমি কখনো বলি না, ৬ মাসের ফি আমাকে একসাথে দিয়ে যান, যেটা অনেক প্রতিষ্ঠান হরহামেশাই বলে।
অনেক শিক্ষার্থীর আর্থিক সংকট আছে। তাদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন?
পেন্ডামিকের কারণে অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। ওদিকে জিনিশপত্রের যে দাম, সবমিলিয়ে একটা অসহনীয় অবস্থা। এ অবস্থায় মানুষের কষ্টের জায়গাটা উপলব্ধি করে আমরা ঘোষণা দিয়েছি যে, এই সামারে ৫০ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট দেব। আমাদের একটু কষ্ট হলেও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ভালো থাকুক—তাতেই আমাদের স্বার্থকতা।
অভিভাবকদের উদ্দেশে আপনার কী বলার আছে…?
আমরা শুধু শিক্ষার্থীদের নিয়েই কাজ করি না, অভিভাবকদের নিয়েও কাজ করি। তাদের ভালোমন্দও আমরা দেখি। সেই সুবাধে কিছু কথা বলতে চাই। অভিভাবকদের বলবো, বাচ্চাদের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করুন। যত ব্যস্তই থাকুন না কেন, সন্তানের জন্য সময় বের করুন। তাদেরকে শিক্ষকের হাতে তুলে দিয়েই নিজের দায়িত্ব এড়াবেন না, আপনি তাদের পড়ার টেবিলে সময় দিন। একসময় আমিও সন্তানের জন্য অনেক ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এখন তারা বড় হয়েছে, ভালো রেজাল্ট করেছে, তাই এবার অন্যের সন্তানের পেছনে সময় দিচ্ছি। কোন জায়গাটায় পড়তে দিলে বাচ্চাটা ভালো করবে, সে ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
কালেকটিভ টিউটোরিয়াল নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
কালেকটিভ টিউটোরিয়ালের সাফল্য দেখে অনেকেই ব্রঙ্কস, জ্যামাইকাসহ আরও অনেক জায়গায় শাখার খোলার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। তবে পরিকল্পনা আছে শাখা খোলার। আমার ছেলেমেয়েগুলো এখনো পড়াশোনার মধ্যে আছে, তারা পড়াশোনা শেষ করলে তাদের তাদের দায়িত্ব ছেড়ে শাখা খুলতে চাই। জানি না এই পরিকল্পনার কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবো, তবে সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।