স্বপ্নকে তাড়া করে শূন্য থেকে কীভাবে শিখরে উঠতে হয়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মো. খলিলুর রহমান। মাত্র এক যুগ আগেও যিনি ছিলেন রেস্টুরেন্টের ওয়েটার, তিনিই এখন নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যতম বিজনেস আইকন। খলিল নামটাই এখন ব্র্যান্ড। তার ব্যবসার পরিধি নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে পাখা মেলতে যাচ্ছে ঢাকায়। নিজের জন্মদিনে সেই স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন চ্যানেল৭৮৬-কে।
জন্মদিনে নিজের ব্যবসায়িক জার্নি নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমার ব্যবসা আমার স্বপ্নের সীমাকেও ছাড়িয়ে গেছে। যতটুকু আশা করেছি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার বেশি পেয়েছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। তবে মানুষের স্বপ্নকে তো আর লাগাম দেওয়া যায় না, সাফল্যরাও পায়ে পায়ে এগিয়ে যেতে চায়। তাই আমিও এগিয়ে যেতে চাই আরও অনেক দূর। মানুষের জন্য কিছু করতে চাই, ভালো ভালো রেসিপি তৈরি করে তাদেরকে আনন্দ দিতে চাই।
আপনার বর্তমান ব্যবসার পরিধি কতটা?
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘ইনস্টিটিউট অব কালিনারি এডুকেশন’ থেকে ডিগ্রি নেওয়ার পর অনেকটা দুঃসাহস দেখিয়ে শুরু করে দিয়েছিলাম খলিল বিরিয়ানি হাউস। আলহামদুলিল্লাহ, তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আমার ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে খলিল হালাল চাইনিজ, খলিল পিজা অ্যান্ড গ্রিল, খলিল সুইটস অ্যান্ড বেকারি এবং খলিল সুপার মার্কেট। এছাড়া আর্তমানবতার সেবা করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছি খলিল ফুড ফাউন্ডেশন।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পাওয়ার ব্যাপারটা জানতে চাই।
ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি আর্তমানবতার সেবায় নানা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইউএস প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলাম। এই অ্যাওয়ার্ড যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা। কমিউনিটিতে অবদান রাখা এবং মূলত যারা আমেরিকাকে গড়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাদেরকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
জন্মভূমি বাংলাদেশের সঙ্গে আপনার ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। সেটা কীভাবে?
আমরা আসলে বাংলাদেশি প্রোডাক্ট ম্যানুফেকচার করে আমেরিকাতে আনতে চাচ্ছি। বাংলাদেশে উৎপাদন হয় এবং এখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে চাহিদা আছে, সেই প্রোডাক্টগুলোই আনার পরিকল্পনা রয়েছে। যেমন চাল, ডাল, গমর মশলা, সরিষার তেল, হলুদ, মরিচ ইত্যাদি। আমেরিকায় প্রোডাক্ট বিক্রির কিছু রিকোয়ারমেন্ট আছে, সেগুলো ফুলফিল করেই প্রোডাক্ট আনা হবে। সেগুলো আমরা শুধু নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতেই সরবরাহ করবো না, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও পাঠাবো।
বাংলাদেশে খলিল বিরিয়ানীর শাখা হচ্ছে, এটা কতটুকু সত্য?
হ্যাঁ, এরকম একটা পরিকল্পনা আছে। খলিল বিরিয়ানীর বাংলাদেশি শাখাটা হবে ঢাকায়। এটা অবশ্য পরিকল্পনার চেয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে। প্রোসেসিংয়ে আছে বলা যায়। এ ব্যাপারে সার্টিফিকেশন বা পারমিশন পাওয়ার যে প্রোসিডিওর, সেখানে একটু দেরি হচ্ছে। তাই সময় বেঁধে দিয়ে এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না। তবে অনুমতি পেয়ে গেলে দ্রুতই আমরা কাজ শুরু করবো, ইনশাআল্লাহ।
ঢাকায় কালিনারি ট্রেনিং সেন্টার হচ্ছে আপনার হাত ধরে?
খলিল বিরিয়ানীর শাখার সঙ্গেই এ সংক্রান্ত একটা আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং সেন্টার উদ্বোধন করার ইচ্ছা আছে। সেখানে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং কালিনারি আর্টসের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটিতে আমরা সার্টিফিকেট কোর্স করাবো। আমরা বিশ্বাস করি, কালিনারি আর্টস অনেক বড় একটা শিল্প। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে আমরা এটাকে ছড়িয়ে দিতে চাই।
আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার প্রস্তুতি কতদূর?
এ নিয়ে আমরা ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি। ২০২৪ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে আমরা এটা করবো ইনশাআল্লাহ। এটা হবে ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের সহযোগিতায়। বৃটিশ কারি অ্যাওয়ার্ড মূলত ইউকে বেজড। শুধু বৃটেনের রন্ধনশিল্পীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন। কিন্ত আমেরিকান কারি অ্যাওয়ার্ডে যুক্তরাষ্ট্রের রন্ধনশিল্পীদের পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইতালি ও বৃটেনসহ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের রন্ধনশিল্পীরা অংশ নিতে পারবেন।
চ্যানেল ৭৮৬ এর নিউজ রুম এ যোগাযোগ করতে ই মেইল করুন এই ঠিকানায় [email protected] । আপনার পন্য বা সেবার প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কল করুন +1 (718) 355-9232 এই নাম্বারে।