আল আকসা মসজিদ
মসজিদুল আকসার সম্মান কতটা- তা বুঝতে একটি বিষয়ই যথেষ্ট যে, ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ছিল মুসলমানদের প্রথম কেবলা। এখনো এটি মুসলিম জাতির কাছে মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববির পরেই সবচেয়ে পবিত্র স্থান। কখন কে নির্মাণ করেছিল মুসলমানদের প্রাণের এই স্থাপনা? আসুন, সোনালী অতীত থেকে জেনে নিই আজকের বেদনাদায়ক বর্তমান।
১। কয়েকটি মতানুসারে, সর্বপ্রথম আদম (আ.) মসজিদুল আকসার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
২। ইমাম কুরতুবির মতে, মসজিদুল আকসা প্রথম নির্মাণ করেন আদম (আ.) এর কোনো এক সন্তান।
৩। ইবনে হাজার আল-আসকালানির মতে, নূহ (আ.) এর সন্তান সাম মসজিদটির নির্মাণ করেছেন।
৪।কেউ কেউ বলেন, ইব্রাহিম (আ.) এর সন্তান নবি ইসহাক (আ.) আকসা নির্মাণ করেছিলেন।
৫। সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মত হলো- কাবা ঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর ইবরাহিম (আ.)-এর নাতি বনি ইসরাইলের প্রথম নবি হজরত ইয়াকুব (আ.) জেরুজালেমে মসজিদ আল-আকসা নির্মাণ করেন।
৬।প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, খ্রিস্টপূর্ব ৯৫৭ সালে বাদশাহ সুলাইমান (আ.) নতুন করে জিন জাতির মাধ্যমে মসজিদটি নির্মাণ করেছেন। ধারণা করা হয়, মসজিদটির সেই আকারই এখনো বর্তমান।
৭। খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাবের আমলে জেরুসালেম বিজয় হলে বর্তমান মসজিদের স্থানে তিনি একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।
৮। উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিকের যুগে মসজিদটি পুনর্র্নিমাণ ও সম্প্রসারিত করা হয়।
৯। ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে ৭৪৬ খ্রিস্টাব্দে আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর এটি পুনর্র্নিমাণ করেন।
১০।আরেকটি ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ১০৩৩ খৃস্টাব্দে ফাতিমি খলিফা আলি আজ-জাহির পুনরায় মসজিদটি নির্মাণ করেন, যা অদ্যবধি টিকে আছে।
১১।১৫ জুলাই ১০৯৯ সাল। ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য বেদনাদায়ক দিন। অযোগ্য মুসলিম শাসকদের ছত্রছায়ায় খ্রিস্টান ক্রুসেডার বাহিনী ফিলিস্তিন দখল করে। আল আকসাও তাদের অধীনে চলে যায়।
১২। দখলের পর ক্রুসেডাররা মসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত কুব্বাতুস সাখরাকে গির্জা হিসেবে ব্যবহার করত। মুসলিম বীর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি জেরুসালেম পুনরায় জয় করার পর ১১৮৭ সালে মসজিদ হিসেবে এর ব্যবহার আবারও শুরু হয়।
১৩। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রাষ্ট্র ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে মসজিদুল আকসা জবরদখল করে নেয়। এরপর থেকে সেখানকার মুসলিম জনগণ মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।