আফগানিস্তান থেকে সর্বশেষ মার্কিন সেনা প্রত্যাহার যে কোনও সময় হতে পারে। এরই মধ্যে রাজধানী কাবুলের উত্তরাঞ্চলের বারগাম বিমানঘাঁটি থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা চলে গেছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই বছর ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ করতে চান। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি যুক্তরাষ্ট্রের আফগান যুদ্ধের সম্ভাব্য ব্যয় নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
২০০১ সালের অক্টোবরে তালেবানকে উৎখাত করে আফগানিস্তান দখল করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের দাবি ছিল, ৯/১১ হামলার নেপথ্যে থাকা ওসামা বিন লাদেন ও আল-কায়েদা নেতাদের আশ্রয় দিচ্ছে তালেবান সরকার।
তালেবানরা যুদ্ধ চালিয়ে গেলে ও পুনর্নির্মাণের জন্য ওয়াশিংটন সেখানে সেনা উপস্থিতি বাড়ায়। এতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় হয়। গত বছর মার্কিন সেনার সংখ্যা ৪ হাজারে নেমে আসে। এই বছর তা আরও কমে যায়।
সরকারি তথ্যে সব সময় স্পেশাল অপারেশন ফোর্সেস ও অপর অস্থায়ী ইউনিটগুলোর কথা উল্লেখ করা হয় না। প্রায় ৬৫০ জন সেনা কূটনীতিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আফগানিস্তানে রয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এছাড়া আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসরকারি নিরাপত্তা কন্ট্রাক্টর কাজ করেছেন। মার্কিন কংগ্রেসের গবেষণা অনুসারে, ২০২০ সালের শেষের দিকে এমন মার্কিন নাগরিকের সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৮০০ জনের বেশি।
২০ বছর অবস্থানের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ থেকে সরে আফগানবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়াতে মনোনিবেশ করলে ব্যয় কমে আসে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০১০-২০১২ সালে যখন আফগানিস্তানে লক্ষাধিক মার্কিন সেনা মোতায়েন ছিল তখন প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হত প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে বার্ষিক ব্যয় ৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয় ছিল ৭৭৮ বিলিয়ন ডলার।
এর সঙ্গে রয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউএসএআইডিসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থা পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে ৪৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।
এর ফলে মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮২২ বিলিয়ন ডলার। তবে এতে আফগানিস্তানে অভিযান পরিচালনায় পাকিস্তানে ঘাঁটি পরিচালনার ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।