
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগ কর্তৃক দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দেড়টায় কলা অনুষদ ভবনের করিডরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন দাওয়া এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ইকরামুল ইসলাম এবং আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের জামান। শিবিরের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমাবর বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের করিডরে শিবির সন্দেহে ইকরামুল ইসলামকে মারতে শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। প্রায় ৮-১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করতে করতে গেট দিয়ে বের করে দেন। এরপর ওই শিক্ষার্থী চলে যান। পরে জামান সাদ্দাম হোসেনকে হল থেকে অনুষদ ভবনে ডেকে নিয়ে শিবির সন্দেহে মারধর শুরু করে ছাত্রলীগকর্মীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জামাল আতঙ্কে দৌড় দিলে পিছনে পিছনে টিএসসিসি পর্যন্ত দৌড়ানি দিয়ে আবারও অনুষদ ভবনে ফিরে আসেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে ওই শিক্ষার্থী টিএসসির করিডর দিয়ে বের হয়ে যান। পরে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী অনুষদ ভবনের বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষে গিয়ে শিবির সন্দেহ শিক্ষার্থীকে খুঁজতে থাকেন। তবে কাউকে না পাওয়ায় অনুষদ ভবন ত্যাগ করেন ছাত্রলীগকর্মীরা। এরপর ক্যাম্পাসসহ প্রশাসনিক ভবন শোডাউন দেয় তারা। পরে জঙ্গিবিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইকরামুল বলেন, ‘আমি পরীক্ষা শেষ করে করিডোরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় আমাকে কয়েকজন জিজ্ঞেস করে আমি শিবির করি কিনা। আমি বলি শিবিরের সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এরপর হঠাৎ আমাকে মারধর শুরু করে এবং বেরিয়ে যেতে বলেন।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জামান বলেন, ‘দেড়টা পর্যন্ত আমার ক্লাস ছিল। ক্লাস শেষ করে মেসে যাচ্ছিলাম। সাদ্দাম হলের সামনে গেলে কয়েকজন আমাকে নাম বিভাগসহ বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে। পরে অনুষদ ভবনের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর আরো কয়েকজন মিলে জিজ্ঞাসাবাদ করে। শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা জানতে চায়। কোনরূপ সংশ্লিষ্টতা নেই বললেও আমার সাথে মারমুখী আচরণ করে। একপর্যায়ে দৌঁড়াতে বললে আমি ভয়ে দৌঁড়ে চলে যাই। কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও একটা সংগঠনের তকমা দিয়ে যেভাবে হেনস্তা করা হলো, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি ইসলামিক সাবজেক্টে পড়ি বলেই কি আমার সাথে এমন আচরণ করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘অনুষদ ভবনের কয়েকজন শিক্ষার্থী অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দলবদ্ধ ছিল। এ খবরে শিবির সন্দেহে তাদের ধাওয়া করা হয়। তবে মারধর করার বিষয়ে আমার জানা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।